টোরাণ্টোর রঙ্গ বোঙ্গো - দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি : সুমিত রায়
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ৩১ জুলাই ২০১৩ | ৮৯৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১২
বইয়ের বাজারে মন্দা লেগেছে কিছুদিন, এবারের হিসেবে তো সারা বাজার যোগ করলে বইয়ের দোকান পুরো একটাও হবে না, বারোআনা হতে পারে। তার মধ্যে নজরে পড়ার ব্যাপার হচ্ছে অনেক ইংরেজী বই-- অবশ্যই প্রায় সবই বাংলা বইয়ের অনুবাদ। রবীন্দ্রনাথের অনুবাদ তো আছেই, "শ্রাদ্ধবার্ষিকীতে" দাড়ি মুচড়ে যতোটা উপায় করে নেওয়া যায়, কিন্তু সুনীল গাঙুলী বা শীর্ষেন্দু মুখুজ্জের উপন্যাস, এমন কী "পদিপিসির বর্মিবাক্স"? বাংলা সাহিত্যের এসব অমূল্য সম্পদ কি আমরা আমাদের বাংলাভাষা-অভাষী ছেলেপুলেদের হাতে পৌঁছে দিতে চাইছি? মধ্যে আমরা, আমাদের অভিবাসী সমাজের বেবী বুমাররা (সত্তরের বা তার আগের দশকে যাঁরা এসেছেন) যখন অবসর নেবার কাছাকাছি আসছি তখন কোলকাতার বহুতল বাড়ীর দালালেরা সদলে এসে অনেক ঝাঁপ খুলতেন আর চেঁচামেচি করে খদ্দের ডাকতেন। তা এখন অনেকেই কেনার থেকে বেচার কথা ভাবছেন, কাজেই সে বাজারটি মন্দা, দোকানীরাও অদৃশ্য। দুটি দোকান টিম্টিম্ করছে। তবে নজরে না পড়েই পারে না যেটি সেটি হোলো এক জ্যোতিষীর দোকান, সেখানে জ্যোতিষসম্রাট স্বয়ং দোকান আলো করে বসে আছেন। ইনি বেশ যশস্বী মনে হোলো, এঁর সচিত্র বিজ্ঞাপন প্রায়ই দেখা যায় কাগজপত্রে, যাঁরা পরশুরামের সিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড মনে করতে পারেন, তাঁরা শ্যামানন্দ ব্রহ্মচারীর মূর্তিটি ভেবে নিন। গোড়ায় লোকজন হচ্ছিলো না, বোধ্হয় লোকে ভয়ে দূরে ছিলো, মেলা শেষের কালে দেখি বেশ ভীড়। এইটি যোগ হতেই মেলা একেবার খাঁটি মেলায় দাঁড়ালো। কেন, এদেশী কার্নিভালে স্ফটিক গোলক্ধারিণীদের দেখেননি? যাক, জ্যোতিষী আবার আসুন, বাতের ব্যথাটা চাগাড় দিচ্ছে, একটা পাথর-টাথর ধারণ করার দরকার হয়ে পড়ছে।
টোরাণ্টোর রঙ্গ বোঙ্গো - প্রথম কিস্তি : সুমিত রায়
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ১৭ জুলাই ২০১৩ | ২৭৪১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪২
বঙ্গ সম্মেলনের তেত্রিশ বছরের ইতিহাস দেখলে আমাদের এখানকার অভিবাসী জীবন বিবর্তনের একটা চলচ্চিত্র পাওয়া যাবে, যেমন হওয়া উচিত। আমাদের সমাজ বেড়েছে, সমাজের সঙ্গতি বেড়েছে, সম্মেলনও তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। গোড়ার দিকের বোল ছিলো আমাদের সংস্কৃতির ধারা এখানে বহমান রাখা, তা সে আমরা নিজেরাই করতাম, দেশ থেকে গুণীদের এনে করবার রেস্ত ছিল না। মধ্যে ধুয়ো উঠলো আমাদের দ্বিতীয় প্রজন্মকে এই সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী করে যেতে হবে। সে ভবীরা এসব ছেঁদো কথায ভোলবার নয়, তারা এ সম্মেলনের ধারে কাছেও ঘেঁষলো না। তবে আমরাও হতাশ হবার পাত্র নয়, আমরা আস্তে আস্তে দেশ থেকে নামকরা শিল্পীদের আনতে আরম্ভ করলাম, প্রথমে রবীন্দ্রসঙ্গীত, তারপর নাটকের দল, আধুনিক গাইয়ে-- তারপর আস্তে আস্তে বাউল, পল্লীগীতি এমনকী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতও ঢুকে গেলো কখন ফুড়ুত্ করে। বছর দশেক বা পনেরো আগে থেকে আমাদের সমাজে অনেক নতুন ধরণের মানুষ আসতে শুরু করলেন আর সম্মেলনের আর্থিক ব্যাপারটাতেও বেশ ঘোরতর পরিবর্তন এলো। সেটা কী, তা নিয়ে আরেকদিন আলোচনা করা যাবে, কিন্তু ফলং আমরা ওই দ্বিতীয় প্রজন্ম-টজন্মের ছেঁদো কথা বাদ দিলাম, সম্মেলন হোলো "সন্মেলন" (এই সম্মেলনের ছাপা নির্ঘণ্ট পশ্য) আর সংস্কৃতির ফোকর দিয়ে বলিউডি নাচগানধামাকা ঢুকে গেলো। আমজনতা ভারি খুশি, এবং এই সব মেলার সেইটেই আসল কথা।
রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহ : সুমিত রায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৮ আগস্ট ২০১১ | ১০৪৩ বার পঠিত
নিরাশ হতে হল ছাদে যাবার চেষ্টায়। দোতলা থেকে তেতলায় ওঠার সিঁড়িটিতে নাকি ফাটল দেখা দিযেছে, সেই কারণে এই সতর্কতা। ছাতেই সেই বার্মিজ ঢঙের চন্দ্রাতপ, প্যাভিলিয়ন, কবির অনেকটা সময় কেটেছিল এইখানে। অদেখা ইয়ারোর কিছু স্বপ্ন নিয়েই ফিরতে হল, তবে এভাবে দেখলে ব্যাপারটা হজম করা যায়। এর প্রতিকার করা আজকের প্রযুক্তি কৌশলের কাছে কিছুই নয়, বাংলাদেশে বহু ভালো প্রযুক্তিবিদ আছেন, আশা করি সরকার এতদিনে সব ঠিক করে তেতলা ওঠার পথটা খুলে দিয়েছেন। অসুবিধের মধ্যে গাইডরা সবসময় জিউলির আঠার মতো সঙ্গে ছিলেন, এই এঁদের কাজ, এতে আপত্তি করা যায় না। তাছাড়া যাঁর শবদেহ থেকে শ্মশ্রু উৎপাটিত হয়েছে, তাঁর মশারীর চাল যে চুরি হবে না, সে গ্যারাণ্টি কে দেবে। তবে একটু সময় একলা থেকে স্মরণ করতে পেলে ভালো লাগতো।