বাটা ঝিলমিল বাটা ঝিলমিল বন্ধু খাওরে বাটার প্রাণ : সামরান হুদা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ এপ্রিল ২০১৩ | ২২১৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৮
আমরা, ছোটরা তখন দাদির মুখের চিবুনো পান খেতাম। অনেকক্ষণ ধরে চিবিয়ে চিবিয়ে পান খেত না দাদি। খানিকক্ষন চিবিয়ে রসটা খেয়ে নিয়ে পানটা হাতে নিয়ে আওয়াজ দিত, ‘পান কেডা খাইবি আয় রে’ বলে। ততক্ষণে পানের রসে টুকটুকে লাল হয়ে যেত টকটকে ফর্সা দাদির দুই ঠোঁট আর ঠোঁটের কষ। তাকালে দেখা যেত অপূর্ব এক লালের আভা ছড়িয়েছে ঠোঁট ছাড়িয়ে চিবুকের খাঁজে, বয়েসের ভাঁজে। একটা দুটো হাত সঙ্গে সঙ্গেই এগিয়ে যেত সেই চিবুনো পান খাওয়ার জন্যে। সকালের নাশ্তা বা দুপুরের খাওয়া বা বিকেলের চায়ের পরে আব্বা যখন বারান্দায় দাদির বেতের সোফার পাশে দ্বিতীয় সোফাখানিতে গিয়ে বসত, তখন একখিলি করে পান এগিয়ে দিত দাদি। মায়ের পাশে বসে গল্প করতে করতে পান চিবুতো আব্বা।
একটি ব্যক্তিগত যাত্রা : সামরান হুদা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২০ আগস্ট ২০০৬ | ৯৮৮ বার পঠিত
সড়ক পথে ভারত থেকে বাংলাদেশ যাওয়াটা বেশ মনোরম। প্রচুর বাস হয়েছে, মাশুলও নগন্য, আর চারপাশ দেখতে দেখতে বেশ যাওয়া যায়। বর্ডারে আগে বেশ ঝামেলা করত কাষ্টমস কিন্তু এখন বাসওয়ালারাই সামলে নেয় সবকিছু,কিছু প্যাকেজ হয়ে থাকবে। সকালে এখানে বাসে উঠে পড়ো আর তারপর ওরাই সব দেখে-শুনে নেবে। ভোর ছটায় কোলকাতা থেকে বাস ছেড়েছে আনুমানিক সন্ধ্যে ছ'টায় ঢাকায় নামিয়ে দেবে, বাসে ওঠার আগে থাকতেই সেটা জানা। বেনাপোল বর্ডারে পৌঁছাতে যা সময় লাগে তার আধ ঘন্টা আগেই পৌঁছালো বাস, ইমিগ্রেশন কাষ্টমস সেরে নিয়ে বাস আবার চটপট ঢাকার পথ ধরলো দেড় ঘন্টার মাথায়। বাসে যিনি অ্যাটেন্ড্যান্ট, তিনি বললেন আজ সবকিছুই খুব তাড়াতাড়ি মিটে গেল, বিকেল পাঁচটার মধ্যেই ঢাকায় পৌঁছে যাব ইন্শাল্লাহ। আমি পেট্রাপোল থেকে চট্টগ্রামে বাবাকে ফোন করে জানিয়ে দিলাম যে পাঁচটার মধ্যে পৌঁছে যাব, আর জানতে চাইলাম তারপরে কিভাবে চট্টগ্রামে যাওয়া হবে?
জরুরী অবস্থা : সামরান হুদা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ এপ্রিল ২০০৭ | ৯১২ বার পঠিত
মা হজ্জ্বে যাবেন। মায়ের সাথে আমার দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিলো নভেম্বরের শেষে। কিন্তু বাংলাদেশের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাবা বারণ করলেন তখন যেতে, বললেন, এখন এলে আটকে পড়বে। প্রায় প্রতিদিনই হরতাল আর অবরোধ। এই সময়ে এসো না। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আসার দরকার নেই। আসার দরকার নেই, শব্দটা বেশ পীড়াদয়ক। বাপের কাছেও যেমন তেমন মেয়ের কাছেও। ডিসেম্বরের ১৫তারিখে মায়ের ফ্লাইট ছিল। সেটি ক্যানসেল হয়ে যাওয়ায় যাত্রাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অবশেষে তারিখ পড়ে ২৯শে ডিসেম্বর। আগে থেকে ঠিক করা হজ্জ্ব প্রোগ্রামের সব কিছু ওলট পালট হয়ে যায়, বেশ ভোগান্তি হয় মায়ের। মায়ের ফেরার সময়ে আমি যেতে পারিনি নিজের কিছু অসুবিধে থাকায়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ভিসার জন্যে পাসপোর্ট জমা দিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন অফিসে গিয়ে দেখি তিন সারির লম্বা লাইন।
ফেজারগঞ্জ : সামরান হুদা
বুলবুলভাজা | ভ্রমণ | ০৯ নভেম্বর ২০০৭ | ১২৩৫ বার পঠিত
বাসগুমটির কাউন্টারের কাকুর কথামত ঠিক তিন ঘন্টাতেই বাস এসে পৌঁছালো নামখানায়। একটা গঞ্জ মত জায়গা, নদীর পারের গঞ্জ। অনেকটা মেঘনাপারের ভৈরববাজারের মত। এই নদীটির নাম হাতানিয়া দোয়ানিয়া। দেখে আশ্চর্য হলাম, নদীতে সেতু নেই। কলকাতার এত কাছে এই রকম একটা জায়গা আছে, যার এপার-ওপার দুপারেই বাস চলে কিন্তু নদী পেরুতে হয় নৌকায় করে! ভাবতে পারিনি সত্যিই।
ঈদের কথা : সামরান হুদা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ৩১ অক্টোবর ২০০৬ | ১০১৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
এখানে ঈদ নিয়ে প্রতিবছরই একটা কনফিউশন থাকে। ঈদের জন্যে সরকারী ছুটি একদিন। দিন-তারিখ হিসেব করে ক্যালেন্ডারে তারিখটা লাল কালিতে লিখে দেওয়া হয়, ছুটির দিন হিসেবে। তবে ক্যালেন্ডারের ঐ লাল কালি দেওয়া তারিখটিতে ছুটি কমই পড়ে। তিরিশদিনের রোযার হিসেবে ছুটি নির্ধারিত হয় কিন্তু প্রায় প্রতিবছরই রোযা ২৯দিনে শেষ হয়। যেহেতু চাঁদের উপর নির্ভর করে তাই চাঁদ দেখার খবর পাওয়া মাত্রই পরদিনটি ছুটির দিন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। কিছু কিছু অফিস তাও খোলা থাকে, অন্য ধর্মাবলম্বীরা এই অঘোষিত ছুটির দিনটিতে কাজ-কর্ম করেন, ক্যালেন্ডারের লাল দাগ অনুসারে তারা পরদিন ছুটি উপভোগ করেন।
উত্তম বসনে বেশ করয়ে বনিতা : সামরান হুদা
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : পুজো ২০০৯ | ০১ অক্টোবর ২০০৯ | ৯৮৯ বার পঠিত
মেয়েরা শার্ট পরে না। ঘোষণাটা দিলেন আমার দাদী জোবায়দা খাতুন চৌধুরানী। সে এক ঈদের সময়। নতুন জামা আসছে আসছে করছে, নেহাত আব্বার অফিস থেকে ফিরতে মেলা রাত হয়ে যায় বলে বন্দর বাজারে গিয়ে কেনাটা হয়ে উঠছে না, তবে আব্বা বলেছে, ধরে নাও কেনা হয়ে গেছে আর আমিও তাই ধরেই নিয়েছি। যদিও প্রতিদিনই অপেক্ষায় থাকি, এই কেনা হয়ে গিয়েছে ধরে নিয়ে রাখা জামা-কাপড়-জুতোগুলো আসলেই কেনা হবে কবে।