দ্যাশের মাটি : সঙ্ঘশ্রী সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৫ আগস্ট ২০২২ | ১৯৬১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
সারাটা দাঙ্গার সময় খোকনের কলকাতায় কাটলো। কি আতঙ্ক, কি আতঙ্ক রে বাপ। রোজ অপেক্ষায় থাকে এই বোধহয় কেউ ছুরি হাতে বাসায় ঢুইক্যা আইলো। দাঙ্গা কি আর আগেও দ্যাখে নাই খোকন, ছোটখাটো কম হয় নাই দ্যাশেও।কিন্তু মাতব্বররা সালিসি করসে, কার দোষ ঠিক কইরা দিসে, থাইম্যা গেসে। ১৯৪৬ এর দাঙ্গার এক্কেরে আলাদা। কলুটোলা, রাজাবাজার,পার্কসার্কাস সব বেবাক চুপচাপ। লিচুবাগানের ঘটনার পর তো কলকাতা থম মাইর্যা গেলো। দ্যাশের খবরও খুব খারাপ। নোয়াখালি, আরও কত জায়গার খবর আসে। খোকন অস্থির হইয়া ওঠে, ভিতরে ভিতরে। দাঙ্গার আগুনে সব ছাড়খার।সন্ধ্যাবেলা পিসা আর পিসার বন্ধু অমলবাবু কত কথা কয়, খোকন শোনে একমনে।অমলবাবু বলেন " বুঝলে মিত্তির, লীগ আর হিন্দুমহাসভার নেতাদের বোঝানোই গেলো না, এ লড়াই হিন্দু মুসলমানের বিরুদ্ধে নয়, এ ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে" পিসা কয়,"স্বাধীনতা ও যেই ভাবে আইলো, তাতে লাভ কী হইল অমলবাবু? দ্যাশভাগ আর লাখে লাখে মানুষ আজ ভিটা মাটি ছাইড়া আইতাসে পূর্ব পাকিস্থান থিকা,দাঙ্গা কমলেও এই ভয় কী কমবো কোনোদিন! দুইটা জাতির বিশ্বাস, ভালোবাসা তলানিতে আইসা ঠেকলো ব্রিটিশের শয়তানি আর নেতাদের ভুল চালে।" অমলবাবু কন, ' দাঙ্গা সাধারণ হিন্দুও চায় না মুসলমানও চায় না।চায় শুধু দাঙ্গাবাজগুলো" খোকন ভাবে মামুদ, আনোয়ার তো তারে ভালোবাসে, চিঠি দেয়। খোকন কবে আইবি রে? খোকন তুই নাই তাই ফুটবল খেলা জমে না। তাদেরও অন্তরে বিষ?