রোমানা মঞ্জুর প্রসঙ্গে কিছু ব্যক্তিগত ভাবনা : আল-বিরুনী প্রমিথ
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ২৭ জুন ২০১১ | ৭৭৮ বার পঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষিকা রোমানা মঞ্জুরের সাথে গত ৫ জুন কি বীভৎস এবং ঘৃণ্য কাজ সংঘটিত হয়েছে সে সম্পর্কে কম বেশি আমরা সকলেই অবগত । কাজেই সে সম্পর্কে আমি নিজে আর বিস্তারিত কিছু বলতে চাইনা, কেবল সম্পূর্ণ বিষয়টিতে আমার নিজের কাছে কিছু অসঙ্গতি চোখে পড়েছে, সেটাই আমি এখানে ব্যক্ত করতে আগ্রহী।
প্রথমত, তার সাথে যা হয়েছে সেটা নিয়ে লেখালেখি করতে গিয়ে কিংবা বলতে গিয়ে অনেক জায়গাতেই আমি দেখছি যে বলা হচ্ছে 'তার মত মেধাবী, উচ্চশিক্ষিত একজন নারীর সাথে এরকম ঘৃণ্য কাজ হওয়াটাকে কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না' বা এরকম কিছু কথা। এসব কথার অর্থ কী? তিনি যদি 'মেধাবী' কিংবা 'উচ্চশিক্ষিত' না হয়ে থাকতেন তাহলে কি তার বিরুদ্ধে এই আচরণ গ্রহণযোগ্য হতো ? তিনি যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা না হতেন তাহলে কি এই ভয়াবহ আচরণকে অনুমোদন করা যেত ? যখন কারো প্রতি সহানুভূতি জানাতে গিয়ে এরকম স্পর্শকাতর বিষয়ে 'মেধাবী', 'উচ্চশিক্ষিত' এইসকল শব্দ ব্যবহৃত হয় তখন খেয়াল রাখাটা জরুরি, যে যারা 'মেধাবী' কিংবা 'উচ্চশিক্ষিত' হিসাবে সমাজে সেভাবে পরিচিত নন তাদের সাথে এরকম কিছু হলে তখন সেই বিষয়টা প্রান্তিক হয়ে যায়। আমাদের মনে রাখবার দরকার যে কেউ 'মেধাবী', 'উচ্চশিক্ষিত' হোক না হোক কারো সাথেই এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় । এখানে ব্যক্তির শ্রেণীগত অবস্থান, সামাজিক অবস্থানের চাইতেও ব্যক্তি স্ব্য়ং বেশী গুরুত্বপূর্ণ , রোমানা মঞ্জুরের সাথে যা হয়েছে সেটা নিয়ে আমরা সকলে যেরকম সোচ্চার সেরকম কিছু আমার বা আপনাদের কারো বোনের সাথে হলেও সকলের সোচ্চার হওয়াটাই কাম্য । এক্ষেত্রে মানুষ নিজে যদি তার সামাজিক অবস্থান , শ্রেণীগত অবস্থানের চাইতে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় তাহলে প্রতিনিয়তই এরকম ঘটনা ঘটে যাবার সম্ভাবনা আরো বেশি ।
দ্বিতীয়ত, রোমানা মঞ্জুরের নিজের যেই শ্রেণীগত অবস্থান, তাতে তার ১০ বছর ধরে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করাটাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে তার নিজের গাফিলতি এবং বস্তাপচা কিছু সংস্কার মেনে চলবার অসমর্থনযোগ্য প্রয়াস হিসাবেই দেখতে পছন্দ করব।