: আমি বলি কি, ফেরো...: একা থাকার সিদ্ধান্তটা কেমন মনে হয় তোমার...: আমার মনে হয় অনেকটা সময় একা কাটিয়ে দিতে পারলেও একটা সময় ক্লান্তি আসে মানুষের, কোথাও সে ফিরতে চায়...: ঘর...ঘরের কথা বলছো...: একটা গৃহকোণ, একটা আশ্রয়, একটু নির্ভরতা, একটু বিশ্বস্ততা...হতে পারে ঘর-ই সেটা...: যেখানে মন নেই, ঘর তো সেখানে অবান্তর...নিষ্প্রাণ চারটি দেয়াল শুধু...: সংসার...মানুষ যেটা করে...: অথবা যেটা মন থেকে করে না মানুষ...মেনে নেয়...: মানিয়ে নেয় অথবা...একটু সামলে নিতে পারলে একটা সন্তান নিয়ে নিতে পারো চাইলে...: মনে করছো সন্তান কোনো সংসারকে টিকিয়ে রাখার নিশ্চয়তা দেয়...: কিছুটা বেঁধে রাখে হয়তো...পৃথিবীতে কোনটাই-বা নিশ্চিত...: আমি মনে করি যেভাবে আছি সেটাই-বা মন্দ কি...: ... ...
অন্তর্জাল! ব্লগ!নতুন গণমাধ্যমের পাঠক-কৌতূহল সম্ভবত সামান্য স্পর্শ করছে আমাকে!আমি এড়িয়ে যেতে পারছি না মনোজগতে এক অস্বাভাবিক আবেগের উপস্থিতি!বিবেচনাবোধলুপ্ত সরীসৃপের মতো আমি নিজেকে সর্পিলাকারে অভিযোজিত করার চেষ্টা করছি বিচিত্রধর্মী পাঠাভ্যাসে, প্রবেশ করার চেষ্টা করছি কার্যকারণহীন প্রতিদিন লেখার অভ্যাসে!এই মাত্র শেষ করলাম শিশুসাহিত্য! পরমুহূর্তে হাত দিলাম কবিতায়! তারপরই হয়তো গল্প, ছড়া অথবা ভ্রমণ কিংবা স্মৃতিচারণ! বাদ যাচ্ছে না কোনোটাই! ভারি অদ্ভুত!ঘোরগ্রস্তের মতো লিখে যাচ্ছি আমি!তিনি এসে বসলেন পাশে!চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে স্মিতহাস্যে বললেন, কী লিখছেন এখন? ঠিক বুঝতে পারছি না! চেষ্টা করছি বিবিধ শিরোনামে কিছু একটা লেখার! তাড়াতাড়ি বললাম আমি। আসলে সময় নষ্ট করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই আমার! কেন লিখছেন? নির্লিপ্ততা তাঁর কণ্ঠে স্পষ্ট।প্রয়োজন! তাই লিখছি! ... ...
"পৌরাণিক ভস্ম থেকে উঠে আসে বেদনার পাখি বিবর্ণ প্রজাপতি ছুটে যায় কালো জল নদীটির কাছে অস্তমিত সব কথা অতীতের নিবিড় অতলে ঘুমিয়েছে আমাদের অন্তর্গত অলীক শহর"পাপা, ক্যান আই টেল ইউ এ্যা স্টোরি অব ডগ।আমি কলম সরিয়ে রাখলাম, গভীর মনোযোগে তাকালাম মেয়ের দিকে। আধো আধো কথা তার। বোঝা না-বোঝার এক আশ্চর্য পৃথিবীতে বসবাস সদ্য খেলতে খেলতে পড়ালেখা শেখার চেষ্টা করা শিশুটির।সস্নেহে বললাম, বলো মা।ওয়ানস আপঅন এ্যা টাইম। থিংক, ইটস এ্যা মিলিয়ন ইয়ার এ্যাগো। দেয়ার ওয়াজ এ্যা ডগ। ওহ! নো! সরি! নট ডগ পাপা। এ্যা নাইস হটডগ দেয়ার।বাংলায় বলো মা গো। বাংলা তো তুমি পারো, তাই না!অফকোর্স আই ক্যান পাপা। ওকে, দেন ... ...
অনন্ত নক্ষত্রবীথির কাছে আমার কিছু চাওয়ার ছিলো না!নির্লিপ্ত চোখ মেলে আমি তাকিয়েছিলাম আকাশে!সামনে একটা দিঘি ভর্তি জল, নিশ্চল পরাবাস্তব একটি মুহূর্ত!মুখভর্তি গোঁফ-দাড়ি নিয়ে মানুষটি আমার পাশে এসে বললেন, আপনার কাছে হাতুড়ি আছে?আমি কোন কথা বললাম না!তিনি বললেন, অসহ্য সুন্দর এই প্রকৃতি, অতুলনীয় অন্ধকার, অনাঘ্রাতা দিঘির নিশ্চল জল- ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে!মৃদু বাতাসে দোলা লাগলো জলে!আমি নিশ্চুপ নির্বিকার নক্ষত্রবীথিতে নিমগ্ন!তিনি বললেন, প্রকৃতিতে স্থির চিত্র বলে কিছু নেই!অস্থির সব- মুহূর্তকাল- তারপর- সব শেষ-এই যে অন্ধকার অনড় মনে হচ্ছে! দাঁড়ান, শেষ করে দিচ্ছি এই অকারণ দীর্ঘসূত্রিতা-তিনি পশ্চিমদিকে ইশারা করলেন!পূর্ণ চাঁদ উঠে এলো আকাশে!অন্ধকার ম্লান হলো!অস্বচ্ছ হলো নক্ষত্রবীথির সৌন্দর্য!তিনি বললেন, এ-ও সুন্দর, ভিন্নরকম-কিছুক্ষণ চুপ ... ...
সুতো কাটা ঘুড়ি ঊর্ধ্ব গগণে উড়ছেকখনও রৌদ্রে দেহ মন তার পুড়ছেকখনও বাতাস মেঘজল মেখে হাসছেসুতো কাটা ঘুড়ি দুঃখবিলাসে ভাসছেসুতো কাটা ঘুড়ি খুঁজছে রঙিন লগ্নসুতো কাটা ঘুড়ি আপন খেয়ালে মগ্নঘুড়ি তাই মোটে পারে না কখনও জানতেনিঃস্ব নাটাই পড়ে আছে কোন প্রান্তে?নাটাই, নাটাই, কোথায় তুমি? কী করছো?সিঁড়ি ঘরে শুয়ে বেদনার লিপি পড়ছো?সিঁড়ি ঘরে বুঝি ধুলো খুব? বায়ু নিশ্চল?ভীষণ আঁধার? সিড়িঘর, হতবিহ্বল?থাকগে নাটাই, ঘুড়ি গেছে যাক, যাকগে;কী করে এড়াবে যা আছে তোমার ভাগ্যে?নিজেকে লুকাও সংযত মন্তব্যেউড়ে যাক ঘুড়ি তার নিজ গন্তব্যে- ... ...
হারানোর অভিজ্ঞতা: আমি একদিন হারিয়ে গিয়েছিলাম প্রিন্স বখতিয়ার শাহ রোডে...: বলো কি!: হুম, নাভীনা হলের সামনে...: আরে বোকা, হলের অপজিটের গলি ধরে খানিক এগোলেই আমাদের বাড়ি, এলেই পারতে...: আমি তো জানিনা তুমি কোথায় থাকো...: ফোন করতে...: দূর! ফোন কোথায় পাবো! ফোন হারিয়ে গেলো বলেই তো হারিয়ে গেলাম আমি...: তারপর?: লোকের মুখে শুনে শুনে মেট্রো স্টেশন...: যাহ! তুমি একদম আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে গিয়েছো, নিশ্চিত...: কে জানে!: এই! এরপর হারালে কিন্তু আমাদের বাড়িতে আসবে...: নাহ! আসা হবে না আর...: কেন?: বড়ো হয়ে হারানোর অভিজ্ঞতা বেশ বিব্রতকর...এবং তৃতীয় দীর্ঘশ্বাস: একটা কথা বলবো?: কী দরকার! কথা বললেই তো অপ্রিয় কথা, অথবা অর্ধসত্য...: কথা ... ...
কোথাও কোনো নীল ছিলো না বলে একটা আকাশ খুঁজেছিলাম, আর, একটু লাল রঙে চেয়েছিলাম দু'হাত মাখতে, যদিও আমি জানতাম আমার নিজের শরীর জুড়ে লোহিত কণিকার সাম্রাজ্য, আর বুক জুড়ে ছিলো দীর্ঘশ্বাসে বিক্ষত বেনামী আকাশ তখনও যুদ্ধ ছিলো পৃথিবীতে, মানুষ লড়ছিলো মানুষের বিরুদ্ধে, মাতৃস্তন্য পান করা বলশালী সন্তান নিজের মা'কে বিস্মৃত হবার আনন্দে চিত্কার করছিলো পৈশাচিকতায়, পিতৃ পরিচয় অস্বীকার করে শক্তিমান যোদ্ধারা পরিণত হচ্ছিলো বক্রচঞ্চু শকুনেজেসাসের এতোটা অসহায় মুখ আমি কখনও দেখিনি আগেঅথচ কিছু করার ছিলো না, আমি নিজেই তখন উপড়ে পড়ছিলাম মাটিতে, শতবর্ষী বটবৃক্ষের মতো প্রাসঙ্গিক অথবা অপ্রাসঙ্গিক ভাবনার শাখা প্রশাখা কাণ্ড মূলসমেত, গলার কাছটায় টের পাচ্ছিলাম উত্তুঙ্গস্পর্শী উত্তাপ, গনগনে এক ... ...
হ্যাঁ, আপনি, আপনাকেই বলছি, জেমস ওয়েব স্পেইস টেলিস্কোপের পাঠানো ছবি দেখে সত্যিই কি আপনি ভালোবেসেছেন মহাকাশকে? বাসলে তো আপনি পৃথিবীকেও ভালোবাসতেন, পৃথিবীর মানুষের প্রতি জন্মাতো প্রীতি আপনার! ভাবনার একেবারে নতুন পরিসর থেকে চোখ সরিয়ে যদি ভাবনার পুরোনো পরিসরেও স্থাপন করি দৃষ্টিভঙ্গীকে, তাহলেও তেমন নতুন কিছু দেখবো বলে মনে হয় না! যেমন, আপনি কি সত্যিই বিশ্বাস করেন যে গাছের জীবন আছে? বিশ্বাস যদি করতেন-ই, তাহলে তো অকাতরে বৃক্ষনিধন করতে করতে একটা পরিবেশগত ভারসাম্যহীন পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারতেন না!এইসব বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার-টাবিষ্কার তেমন কোনো কাজে আসে কি মানুষের! আচ্ছা, বৃক্ষের কথা বাদই দিন, নদী, নদী ভালোবাসেন আপনি? চিত্রা, চিত্রা নদীর নাম শুনছেন নিশ্চয়ই! বাংলাদেশের ... ...
জ্বর হলেই বুঝতে পারতাম ও আছে।প্রথমে ছিলো তীব্র আতঙ্ক, তারপর আধিভৌতিক আশা-নিরাশার ঘোর, তারপর আশাভঙ্গের বেদনাজাত অসাড়তা, তারপর একটা ভীতি, যেমন প্রকট শীতের সন্ধ্যায় পৃথিবীর আশপাশ সঘন বাহুতে আঁকড়ে ধরে সফেদ কুয়াশা, তেমন, তারপর হতাশা, জোরালো থেকে ক্রমান্বয়ে ক্ষীণ, তারপর মলিন বিষাদ, মানিয়ে না নিয়ে উপায় নেই বলে মানিয়ে নেয়া তারপর, তারপর একত্রবাসের অভ্যস্ততা।আমি এখন অভ্যস্ত ওর সাথে বসবাসে।ওকে ধারন করি, ও আছে। ওকে অনুভব করি, ও আছে। ওকে লালন করি, ও আছে। ওকে এখন ভালোই হয়তো বাসি, ও আছে।পর পর কয়েকদিন জ্বর না হলে এখন বরং ওকে নিয়ে দুশ্চিন্তা বোধ করি, ওর উপস্থিতি-অনুপস্থিতির মধ্যবর্তী দোদুল্যমানতায় কাতর বোধ করি, অনুভূতির ... ...
একটা ছবি দেখেই আপনি মহাকাশকে ভালোবেসে ফেললেন, অথচ আপনার একটা পৃথিবী ছিলোএকটা গৃহকোণ ছিলোএকটা বিড়ালএকটা ফিসবৌলে একটা হিরণ্ময় গোল্ডফিসএকটা শেফালি গাছ, হেমন্তরাতে যে গাছটা আপনার জন্য ফুল ফোটাতো এবং ভোরে শিশিরসিক্ত ফুলগুলো সব ঝরিয়ে দিতো অগুন্তি তারার মতো আপনার পায়ের কাছে। প্রিয় মানুষ, আপনি মাথা ঝুঁকিয়ে মাটিতে তাকালেই দেখতে পেতেন মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা তারার চেয়ে সুন্দর এবং সুগন্ধমাখা অপরূপ সৌন্দর্যের নান্দনিক পশরাপ্রিয় মানুষ, নিঃশব্দে নীরবে আপনাকে ভালোবাসতো একজন নারী, আপনি সেটা জানলেন না, তার চোখে চোখ রাখলেন না, পড়ে দেখলেন না তার অব্যক্ত অনুভূতিতে লুকিয়ে থাকা অক্ষরগুলো, অথচ একটা ছবি দেখেই আপনি মহাকাশকে ভালোবেসে ফেললেনএ-ই হয় বুঝলেন, আপন হতে পারার ... ...