এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • MJAL (মনে যা আসে লেখো )

    একক
    অন্যান্য | ০৮ মে ২০১৫ | ২৭১৩৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ১৩ আগস্ট ২০১৮ ০৬:১৯677899
  • তবু পিনাকীর বাক স্বাধীনতা চাই;
    পুলিশরাজ নিপাত যাক!
    ~
  • বিপ্লব রহমান | ২২ আগস্ট ২০১৮ ০৬:২৮677900
  • আমার চোখের সামনে

    আমার চোখের সামনে প’চে গ’লে নষ্ট হলো কতো শব্দ,
    কিংবদন্তি, আদর্শ, বিশ্বাস । কতো রঙিন গোলাপ
    কখনোবা ধীরে ধীরে, কখনো অত্যন্ত দ্রুত, পরিণত হলো ,নোংরা আবর্জনায়।

    আমার বাল্যে “বিপ্লব” শব্দটি প্রগতির উথ্থান বোঝাতো ।
    যৌবনে পা দিতে- না-দিতেই দেখলাম শব্দটি প’চে যাচ্ছে-
    ষড়যন্ত্র, বুটের আওয়াজ,পেছনের দরোজা দিয়ে ,প্রতিক্রিয়ার প্রবেশ বোঝাচ্ছে।
    “ সংঘ” শব্দটি গত এক দশকেই কেমন অশ্লীল হয়ে উঠেছে ।

    এখন সংঘবদ্ধ দেখি নষ্টদের, ঘাতক ডাকাত ভন্ড আর
    প্রতারকেরাই উদ্দীপনাভরে নিচ্ছে সংঘের শরণ । যারা
    মানবিক, তারা কেমন নিঃসঙ্গ আর নিঃসংঘ ও
    অসহায় উঠছে দিনদিন ।

    আমার চোখর সামনে শহরের সবচেয়ে রূপসী মেয়েটি
    প্রথমে অভিনেত্রী, তারপর রক্ষিতা, অবশেষে
    বিখ্যাত পতিতা হয়ে উঠলো ।

    এক দশকে যেতে- না যেতেই আমি দেখলাম
    বাঙলার দিকে দিকে একদা মাথা- ছোঁয়া মুক্তিযোদ্ধারা
    কী চমৎকার হয়ে উঠলো রাজাকার ।
    আর আমার চোখের সামনেই রক্তের দাগ - লাগা সবুজ রঙের
    বাংলাদেশ দিন দিন হয়ে উঠলো বাংলাস্তান ।"

    ---- হুমায়ুন আজাদ
  • বিপ্লব রহমান | ২৬ আগস্ট ২০১৮ ০৮:১৫677901
  • ফুলবাড়ি বিদ্রোহের নেপথ্য কথা নিয়ে হরিদাস পালে দু পয়সা দান করলাম।

    অমনি নীল খাম নোটিশ করলো, "মতামত দিয়েছেন ১ জন!"

    বাহ, বেশ তো!
  • বিপ্লব রহমান | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৫৯677902
  • আমার জন্মের সময় বাবা নকশাল বাড়ি কৃষক বিদ্রোহ করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন, তার জেল হয়েছিল। সেখানে তাকে প্রচুর টর্চার করা হয়। সে সময় তার টিবি হয়েছিল।

    ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাবা জেল থেকে ছাড়া পান। সে সময় তিনি অনেক ভুগেছেন। হয়তো মরেই যেতেন, এমন দশা। পরে মার কাছে সেই গল্প শুনেছি।

    অভাবের সংসারে বাবার অষুধপত্র, দুধ, ডিম, মাখন, ফলমূল ইত্যাদি পুষ্টি যোগাতে মাকে খুব হেনস্থা হতে হয়েছিল। আমরা ছোট ছোট পাঁচজন ভাইবোন।

    সেই সময় মা নিজের সব গহনা বিক্রি করে খরচ জুগিয়েছেন। যুদ্ধের বাজারে তেমন দামও পাননি।

    আরো পরে সাদাকালো ছবিতে মার সে সব পুরনো নকশার ভাড়ি ভাড়ি গহনা দেখেছি, যেন সুচিত্রা সেন!

    আমার মা সারাজীবনে আর কখনও গহনা কিনতে পারেন নি।
    ছেলেমেয়েদের বিয়েতেও কোন গহনা দিতে পারেননি। আহারে রেডিও অফিসের আপার ক্লার্ক মা জননী, আমার চির দুখী মা!

    গহনা হারানো নিয়ে তার দুঃখের যেন সীমা ছিল না; বংশ পরম্পরায় পাওয়া সব গহনা। দেখ, "ছিল না" ই লিখলাম। কারণ মা এখন আর থেকেও যেন নেই, বছর দুয়েক হল পুরোপুরি স্মৃতিভ্রষ্ট, আলঝাইমার্স!
  • বিপ্লব রহমান | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২৩:২৩677903
  • "ভাবের বন্ধু চলে গেল
    বাজার বলে টাটা লো টাটা
    অখন আমি আগুড়কুনে
    করি কাঁদাকাটা

    কত ভাবব লো ধন
    কত কাঁদব লো ধন

    ভাবের বন্ধু চলে গেল
    করি কি এখন..."

    সান্তালদের করম পরবের গান।।
  • বিপ্লব রহমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:৩৮677904
  • ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ইলেকশন, অভাগা দেশে কোটি (০০) টাকার খেলা।

    জানুয়ারিতে নতুন সরকার ( হাসিনা, পাওয়ার্ড় বাই সিয়াইএ+র) গঠন, রাজায় কইছে ইয়ের ভাই...

    ফেব্রুয়ারির পহেলা কলকাতা বইমেলা (আসলে গুরুর স্টল) দেখতে আসতেছি।

    ২০০৩ সালে সর্বশেষ আসছিলাম, জিএমজি এয়ারের ফাস্ট ফ্লাইটে, দুইদিনের মামলা।

    কলকাতার তেমন কিছুই ইয়াদ নাই, নন্দন, চ্যাপলিন সিনেমা, নিজাম, নিউমার্কেট, কফি হাউস আর লিন্ডেসে স্ট্রিট ছাড়া।

    প্রেসক্লাবে একটু ক্ষণ দেখা, টিনের বাংলো, গেঁজেল সাংবাদিকদের ভীড়ে ডারাইছি গো!
    লাল সুতার পাতার বিড়িতে আরাম পাইছিলাম। ত্রিশ বচ্ছর টানার পর তামুক ছাড়ছি, আমাদের পাহাড়ে "দাবা" কয়।

    এখন কইলকাতা+ রায়গঞ্জ (উ.দিনাজপুর, অংকন, আদিবাসী এক্টিভিস্ট, বন্ধু) ৩+৪ মোট সাতদিনের থাকা খাওয়া/ আন্তঃজেলা+ রাজ্য পরিবহন খরচ কতো হইতে পারে?
  • বিপ্লব রহমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:৪৩677905
  • দুস্থ সাংবাদিক, পান্তা+ নুন দুইই বাড়ন্ত
  • Biplob Rahman | ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৬:৪৩677907
  • ব্লগ একসিস হারিয়েছি। গুরুকে ইমেল করেও জবাব পাইনি। ব্লগ একসিসও নাই। কি নাকি টেকনিক্যাল সমস্যা।

    সম্প্রতি কলকাতা বইমেলা সফর নিয়ে গুরুচন্ডালীর জন্য একটি ব্লগনোট লিখেছিলাম। সেটি আপাতত এই খোপে রেখে যাই।

    নিবেদন ইতি।
  • Biplob Rahman | ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৬:৫৪677909
  • হৃদয়ের শব্দহীন জোৎস্নার ভিতর
    --বিপ্লব রহমান--

    *এ কেমন রঙ্গযাদু?*

    ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্ক শপিং মলের আন্ডারগাউন্ডে গিজগিজে মানুষ। ইন্ডিয়ার ভিসা প্রার্থীদের দীর্ঘতর লাইন। হাতে হাতে সবুজ পাসপোর্ট। লাইনে নানা বয়সী পুরুষেরাই শুধু। মেয়েরা এখানে সংখ্যালঘু, তাদের লাইন নাই। মেডিকেল ভিসা প্রার্থীদের আবার আলাদা খাতির। মোডে মোডে ওয়াকিটকি হাতে নিরাপত্তা রক্ষী। ব্যাগ ভেতরে যাবে না, ব্যাগ জমা দিয়ে টোকেন নিন‍ – নির্দেশ তাদের। বিশাল হল রুমে গোটা চল্লিশেক ডেস্ক। ওপাশে পেশাদার তরুণ-তরুণী। ভিসার ধরণ বুঝে টোকেন নিয়ে পাসপোর্ট জমা। স্লিপ হাতে নিতে না নিতেই মোবাইলে টেক্সট-- ভারত সরকারের ভিসা প্রক্রিয়াধীন, অপেক্ষা করিতে হইবে – ইত্যাদি।

    সবখানে সুশৃংখল পেশাদারী হালচাল। আগের সেই বিস্তর ভোগান্তি আর নাই। দালালদের উৎপাত তো নাইই। এসি ফ্লোরের মোড়ে মোড়ে প্যাটিস-চা-কফির দোকান। স্ন্যাক্স খান, লাইন দিন, ভিসা নিন, ইন্ডিয়া যান-ভাবখানা এমন।

    প্রতিদিন নাকি এইরকম ম্যালা লোকের মেলা বসে ইন্ডিয়া ভিসা অফিসে। সকাল ৯টা থেকে ৩টা আবেদন গ্রহণ। ভিসা প্রদান বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। এতো মানুষ ইন্ডিয়ায় যায় কেনো? জনে জনে জিজ্ঞাসা, ভাই কেনো যাইতেছেন? আপনাদেরও কী উঠলো বাই, তো বইমেলা যাই?

    উবার মোটো (মোটরসাইকেল) ডেকে ঘন্টা খানেকের ভেতর আবার কর্মস্থল দেশটিভি। নিউজ বুলেটিনের ফাঁকে ফাঁকে ইন্ডিয়া ফেরৎ সহকর্মীদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়। যেন দুরু দুরু বক্ষ, কাঁপে তাহার হিয়া। ভিসা দিবো তো? মোদি সরকার নাকি সাংবাদিক ডরায়? তায় নয়া পাসপোর্ট। আগের হাতের লেখা পাসপোর্ট বাতিল হইছে, তাই। নইলে কইলকাতা দুই-চাইরবার, আর ত্রিপুরা দুইবার দেখা হইছে। সেই সব সিল-ছাপ্পর থাকলে দেখানো যাইতো।

    নিজস্ব ভিসা কনসাল্টেন্ট রতন সরকারকে ফোন, মামা, ভিসা পামু তো?

    -ভিসা তো দিবোই মামা। সাধারণ ট্যুরিস্ট ভিসা একবছর দেয়। কিন্তু আপ্নেরে ১০-১৫ দিন, কি ছয় মাস দিতে পারে। পাসপোর্ট-ভিসা আবেদনে সাংবাদিক লেখা ঠিক হয় নাই।

    না, মামা, এইটা ঠিক কও নাই। পেশা লুকানো যাইবো না। ধরা পড়লে আর কোনোদিন ইন্ডিয়া ঢুকতেই দিব না। সাংবাদিক আইন মাইনা চইলবো, এইটা সাংবাদিকতার এক নম্বর শর্ত। ...
    দুইদিন পর পর ওয়েব সাইটে টোকাটুকি, ভিসা কি হইলো? হয় না কেরে! অন্যরা ভিসা পাইছে সাতদিনে। চণ্ডালরে ঘুরাইতেছে ক্যা? রুখসানা কাজল আপারে ফোন। আপা বলেন, আরে ধৈর্য ধরুন, বাচ্চাদের মতো করলে হয়? জানান, তারও ফেব্রুয়ারির পহেলাতেই কলকাতা নিমন্ত্রণ আছে। তারও ভিসা চাই। দেখা যাক, দুই চণ্ডাল এক সঙ্গে যাওয়া যায় কি না?

    মেসেঞ্জারে জনে জনে উত্তেজনা ছড়ানো। কইলকাতা বইম্যালায় গুরুর স্টল দেখতে আইতেছি। প্যাঁচার কালা গেঞ্জি গিফট চাই। পাইদিদি আর বিনায়ক রকুর সঙ্গে সেল্ফি তুলুম। সৈকতদার গিটার না শুইনা যামু না। হি হি হি...

    দু্ই সপ্তাহ পর প্রত্যুষে মোবাইলে টেস্কট, মান্যবর, আপনার ভিসা হইয়াছে, জলদি আসুন, খোদ ভারত সরকার আপনাকে ভিসা দিতে অপেক্ষায় – এইরকম।

    ওই সকালেই অফিস ছুটি নিয়ে পাসপোর্ট-ভিসা সংগ্রহ। ছয় মাসের ভিসা দিয়ে আশোক স্তম্ভ সবুজ কালিতে লিখেছে – কেবলই বেড়াইবার জন্য, পেশাগত বা সাংবাদিকতার জন্য প্রযোজ্য নহে! বোঝ কাণ্ড!

    অনলাইন পাঠ অভিজ্ঞতা বলছে, মাসখানেক আগে ধর্ণা না দিলে ট্রেনের আপ-ডাউন টিকিট মিলবে না, তাই। ব্যাংক থেকে জমানো ব্যাঙের আধুলি তুলে ডলার এন্ডোর্সমেন্ট। যানজট ধুলোর মহানগরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটোছুটিতে উবার মটোই ভরসা। এখন চালক-আরহী দুজনেরই হেলমেট আবশ্যক। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কিশোর বিদ্রোহের পর ট্রাফিক পুলিশও খুব কড়া। পান খেকে চুন খসলেই জরিমানা।

    পরদিন সাত সকালে অফিস ডিউটির আগেই কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে ধর্ণা। টিকিট কাউন্টার খোলার আগেই সেখানে ছোটখাট লাইন। কেউ ফিরবেন বলে টিকিট চান। কেউ ভ্রমণের তারিখ বদলাবেন। কারো আবার নতুন টিকিট চাই। কাউন্টারের ওপারে রেলের লোককে অবিরাম ‍“ভাইয়া, ভাইয়া“ সম্বোধন বুঝিয়ে দেয়, তারা কলকাতার মানুষ। নইলে ঢাকায় আ-প্রত্যয় বাহুল্য, শুধু ভাইই যথেষ্ট। অধমের পালা এলে জানা যায়, কাংখিত ১ ফেব্রুয়ারির আপ ট্রেন আছে, তবে ৬ ফেব্রুয়ারির ডাউন ট্রেনের টিকিট নাই।

    তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত, একযাত্রায় পৃথক ফল হবে কেন? বরং বাসেই হোক আসা-যাওয়া। ঢাকা-কক্সবাজার গ্রিন লাইনে লাগে ১৩-১৪ ঘন্টা। যানজটসহ ঢাকা-কলকাতাও তাই। রুখসানা আপার পরামর্শই তাই। তাছাড়া বাস ছাড়বে বাসার কাছ থেকেই।

    কলকাতায় শীত কেমন? আর বোলপুর, শান্তিনিকেতনে? মেসেঞ্জারে প্রতিভাদি বলেন, কলকাতায় শীত প্রায় নেই। বোলপুরে ভালই ঠাণ্ডা এ সময়। কল্লোল দা বলেন, আমার তো একটি জ্যাকেটেই কাজ চলে যায়। পাইদি বলেন, আমি বলবো খুব শীত! কলকাতা কনসাল্টেন্ট তাপস দা হোয়াটস এপে বলেন, ধুর! শীত কোথায়?

    এরই মধ্যে এক শুভাকাঙ্খী, শান্তিনিকেতনে গেস্ট হাউজ বুকিং করে দেন, দুদিন। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, চণ্ডালের দৌড় তেমন কলকাতা নিউ মার্কেট, সদর স্ট্রিট, সলভেশন আর্মি রেড শিল্ড গেস্ট হাউজ। গুগল মামা জানায়, বছর দশেক আগে কলকাতা সফরকালীন নিবাস গেস্ট হাউজটি সগর্বে এখনো বিদ্যমান। ক্যাথলিক ক্রিস্টান পরিচালিত গেস্ট হাইজটি আগের মতোই ঝকঝকে। শুধু নাম কাটছাঁট করে এখন -- রেড শিল্ড গেস্ট হাউজ। তখনই টেলিফোনে ডরমেটরিতে সহজেই বুকিং হয়ে যায়। বিকল্প হিসেবে পার্ক স্ট্রিটে আরেকজন আছে। পারমিতা দিদি, আরো দু-একজন দেন সৎ পরামর্শ। রুখসানা আপার শিডিউলের সঙ্গে মেলে না কিছুতেই। অগত্যা একলা চলো রে...।

    *ফেব্রুয়ারি ইন যশোর রোড*

    ১ ফেব্রুয়ারি ঘড়ি ধরে রাত ১০টা ১০ এ কলাবাগান থেকে গ্রিন লাইনের সরাসরি বাস ছাড়ে। ভলবো বাসগুলোর সিট বেশ আরামদায়ক। আয়েশ করে পা ছড়িয়ে বসা যায়। ভাড়ি হ্যাভারশেক লকার বন্দি। সঙ্গে পাসপোর্ট-টিকিট ইত্যাদি বহনের জন্য ছোট একটি সাইড ব্যাগ মাত্র। দেশজুড়ে অসংখ্য বাস- মিনিবাস-ট্রেন ভ্রমণে এখনো ক্লান্তিহীন। সহযাত্রীদের অনেকেই ঘুমের আয়োজনে, বাকীরা ঘুমে ঢুলু ঢুলু। মোবাইল ফোন খুলে ইবুকে সন্দীপনের গল্পসমগ্র-১ পাঠ। কুইনি, টেলিফোন, ড. রণবীর পোদ্দারের আমেরিকা আবিস্কার, মাঝে মাঝে কার কাছে যাব, তৃতীয় চক্ষু, হৃদয়ের শব্দহীন জোৎস্নার ভিতর...ইত্যাদি। কিছু উপন্যাস অবশ্য আগেই পড়া। আর গুরুতে জানা গেছে-- সন্দীপনী করো না!

    রাত্রি গভীর থেকে গভীরতর হয়। মাওয়া ফেরি পেরিয়ে ফরিদপুরে যাত্রা বিরতি। আবার বাস এগিয়ে চলে। রাত সাবধান!...

    ভোরে যশোর বেনাপোল বর্ডারে বাস দাঁড়ালে রেঁস্তোরায় জলখাবার। কাস্টমস-ইমিগ্রশন অফিস খোলার অপেক্ষা। সকাল ৭টায় পেরুনো গেল এপার। ওপারে ইমিগ্রেশন অফিসার পাসপোর্ট-ভিসা দেখে ছবির সঙ্গে মুখোচ্ছবি মেলান খুঁটিয়ে। ডেস্কের খুপরি থেকে বেরিয়ে “ওয়েট প্লিজ“ বলে পাসপোর্ট নিয়ে উধাও। মিনিট পেরুতে থাকে। সহযাত্রীরা যার যার মতো সীমানা পেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর এক সৈনিক এসে নিয়ে যান সুপরিসর কক্ষে। “চিফ ইমিগ্রেশন অফিসার“ বোর্ড লাগানো দেখে মনে মনে- হালারপুত কী যাইতে দিব না? তাইলে এতো নাটক কইরা ভিসা দিলা ক্যা?...

    নাম বিস্তৃত অফিসারটি অমায়িক, বাঙালি। দুকাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে বলেন, আপনি সাংবাদিক দেখে মতামত নিতে ডাকলাম। বলুন, কেমন দেখলেন সব? কোনো যাত্রী হয়রানী?

    মনে পড়ে, ১৯৯২-৯৩ সালের দিকের প্রথম কলকাতা সফরে সীমান্ত পেরুনোর ভয়ংকর অভিজ্ঞাতা। দুইপারে কাস্টমস-ইমিগ্রেশন অফিস বলতে দুই-একটি টিনশেডের বাংলো। আর কেঁচো-কেল্লোর মতো কিলবিলে ঘুষখোর-বদমাশ কাস্টমস-ইমিগ্রেশন-দালাল-টাউট-কুলি। প্রতি পদে পদে ধাপ্পাবাজি, ঘাটে ঘাটে টাকা আদায়। খাঁ খাঁ রোদ্দুরে শত শত আম জনতার সীমানা পেরুনোর অশেষ ভোগান্তি। সে তুলনাই সীমান্ত এখন অনেক পরিচ্ছন্ন। টাউট-দালাল-হয়রানী নাই, দুপারেই। অবশ্য লুঙ্গি পরা লোকজন পেলে কেমন আচরণ হয়, সেটি অজানা! হা হা হা ...

    ইমিগ্রেশন পেরিয়ে ওপারে যেতেই উদ্বিগ্ন বাস চালক-সুপারভাইজারের শুকনো মুখ, আপনার এতো দেরি? আমরা ভাবলাম, আপনাকে বোধহয় আটকে দিয়েছে!

    সাংবাদিক দেখে চা খেতে ডেকেছিলেন – শুনে তারা হাঁফ ছাড়েন।

    বাস এগিয়ে চলে ১৯৭১ এর সেই যশোর রোড ধরে। এলেন্স গিনসবার্গের সেপ্টেম্বর ইন যশোর রোড, মৌসুমী ভৌমিকের গানে এখনো দৃশ্যমান। ১৯৯৯ সালের আরকে টুকরো স্মৃতি হানা দেয়, শ্যামলী পরিবহনের প্রথম ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিসের প্রথম ট্রায়াল রান। এনালগ থেকে ডিজাটাল যুগে উত্তোরণের কালে ওই ট্রিপে সাংবাদিক টিমে অংশগ্রহণ।

    এপারে বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা চিত্রিত শ্যামলীর এসি বাস যখন ধীর গতিতে ওপারে (সেখানেও যশোর রোড, যশোর জেলা, কি আয়রনি!) পেট্রাপোল পৌছায়, তখন বিস্ময়ে পুরো বাস যাত্রীরা হতবাক। শত শত গ্রামের মানুষ পথ আটকে বসে আছেন রাস্তায়, শুধু এক নজর বাসটিকে দেখবেন বলে।

    নানা বয়সী নারী-পুরুষে, ছেলেমেয়েতে হুলুস্থুল। বাড়ির বউরা শাঁখ বাজান, উলু ধ্বণী দেন, ঢাক-ঢোল-কাঁসর বাজতেই থাকে। স্কুলের ছেলেমেয়েরা বাসটিকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অসংখ্য মানুষ ঘিরে ধরেন বাসটিকে। আরো দূরের যারা, তারাও কাছে আসার জন্য ঠেলাঠেলি করেন!

    টিম লিডারকে বলে অভুতপূর্ব এই দৃশ্যবন্দী করতে বাস থেকে লাফিয়ে নামা। অলিম্পাস অটো এসেলার ক্যামেরায় একের পর এক ছবি উঠতে থাকে। খালি পা, সাদা মলিন থানের এক বৃদ্ধা বাসটিকে ছুঁয়ে হাউমাউ করে কাঁদেন। ঠাকুমা, কাঁদছেন কেন? হট্টগোল ছাপিয়ে বুড়ির মুখের কাছে কান পেতে শোনা যায়, একটি কথাই বারংবার, বাংলাদ্যাশের বাস! আমাগো বাংলাদ্যাশের বাস!

    এক নিমিষে উন্মোচিত হয় মহাসত্য। এই বিশাল জনস্রোত আসলে দেশ বিভাগের শিকার জনগোষ্ঠী। তারা এখনো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ধারণ করেন ফেলে আসা পূর্ববংলা। আর দেশবিভাগের গোপন শেল বিঁধে থাকে পরানের গহীনে।

    *চমৎকার! ধরা যাক দু-একটি মাউস এবার! *

    বাই লাইনে বলা যাক, গুরুচণ্ডা৯র বর্ণ পরিচয়। ২০০৬-৭ সালের দিকে সামরান হুদা, ওরফে শ্যাজাদি আর সুমেরু দা "কারুবাসনা" নামে এপারে দু-একটি সাইটে ব্লগিং করেন। তখন ব্লগ বারান্দায় পরিচয়, পরে ফেসবুক হয়ে বাস্তবে। তারাই গুরুর কথা প্রথমে বলেন। শুরুর দিকেই শুধুই লেখা পাঠ। মতামত, টই, বুলবুল ভাজা – সব কিছু প্রায় দুর্বোধ্য, বিষয়বস্তু অনেকটাই অচেনা। তায় বেশীরভাগই অজ্ঞাতনামা লেখক-পাঠক। তবু আস্তে আস্তে আলোচনা, টই, ভাট, বুবুভাতে ঢুকে যাওয়া। তখনো লগিন পদ্ধতি হয় নাই। হরিদাস পালও আসেন নাই। তবু সব সময় পুরো নাম, ইমেইল দিয়ে সবখানে দাঁত ফোটানোর আপ্রাণ চেষ্টা।

    এই ইমেইলের সূত্রে একদা পাইদি, সৈকত দার ইমেল, গুরুতে লেখার নিমন্ত্রণ। ২০০৫ সাল থেকে বিডিনিউজে কাজ করা। আর ২০০৬ সাল থেকে বাংলা ব্লগিং। অনলাইনে লেখালেখির বাতিক থাকেই। এপারে তখন ব্লগ থেকে ব্লগে খুব অস্থিরতা। দলবাজি আর ভণ্ডায়তনের কেন্দ্র কারুবাসনা তোপ দাগান, ওইপারে থুতু টলমল। মুক্তমনা তখনো ব্লগ সাইট হয়নি, কেবলই অনলাইনপত্র মাত্র।

    তাই লেখার নতুন মঞ্চ পেয়ে আঠা দিয়ে সেঁটে থাকা। শম্বুক গতির ইন্টারনেটই ভরসা। তখনো মোবাইল ভার্সন নাই। টু-জি ফোনে চোখের মাথা খেয়ে কখনো সাইট পড়া যায়। কখনো আবার তাও যায় না। বাংলাদেশের সমসাময়িক ঘটনা, আদিবাসী প্রসংগ নিয়ে লেখার চেষ্টা। এপারের কিছু কিছু লেখাপত্র প্রকাশের জন্য তাগাদা। কিছু কিছু লেখা সম্পাদনা করাও চলে। সব কিছুই হয়ে ওঠে খুব আনন্দময়। সে সময় একদিন পাইদির ফোন! উনি বোধহয় তখন বিদেশে। মানে ইন্ডিয়াও বিদেশ, কিন্তু আরো দূরের বিদেশে হয়তো! সেদিন বুঝি খুশীতে অনেকটা বাকবাকুম।

    তারপর মুক্তমনা ব্লগ হলো, গুরুতেই হলো ব্লগ। হু হু বাবা, এ হলো ক্ষমতাহীনের মিডিয়া, ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়! হরিদাস পালও দু পয়সা দান করার হিম্মত রাখে!

    এদিকে কলি বাস যাত্রা বিরতিতে কেনা গেছে এয়ারটেল ভারতীয় সিম। একমাসের আন লিমিটেড টক টাইম, আন লিমিটেড নেট, এইসব হাবিজাবি প্যাক। পথেই মেসেঞ্জারে জানা যায়, সৈকতদা কাজে আটকে গেছেন, বইমেলায় আসতে পারছেন না। প্রতীভা দি দুঃখ প্রকাশ করেন, তিনি কলকাতার বাইরে। বিনায়ক রুকুর স্পেশাল মম সুমন জানান, বুধবারের আগে তার সময় নাই। কি আর করা? না হয় পরের বার!

    হোয়াটস এপে বার বার ফোন, টেক্সটে খবর নেন, তাপস দা, কলেজ স্ট্রিটের বন্ধু, গুরুচণ্ডা৯র পাঠক সুকান্ত। এখন কতদূর? বইমেলায় কখন? বিএড কোর্সের ছাত্র সুকান্ত পায়ের নখ উল্টে পড়ে আছেন। তাই চণ্ডালকেই যেতে হয় তার কাছে। পথেই এপারেরে উবার এপ (কলতায় অবশ্য- উবের) ফেলে দিয়ে ওপারের উবার এপ নতুন করে নেওয়া। দীর্ঘ রাতযাত্রায়, জাগরণে ক্লান্ত-বিদ্ধস্ত। দুপুর নাগাদ ডরমেটরিতে পৌঁছে বাথরুমে গরম পানির ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট। স্নানাহার সেরে তখনই উবার ডেকে বইমেলা হানা। শেয়ারের ট্যাক্সি এপে চলে দেখে খানিকটা বিস্ময়।

    এক দশকে বেশ আধুনিক কলকাতা। অনেক উড়াল পথ। হলুদ ট্যাক্সি আর অটোর দেখা পাওয়া মুশকিল। জাপান-ভারত যৌথ প্রযোজনার প্রচুর ঝাঁ চকচকে গাড়ি। শহর অনেক পরিছন্ন। রাস্তার পাশে প্রচুর খাবারের দোকান; হরেক রকমের রোলের ছড়াছড়ি। গাড়িঘোড়ামানুষে পুরো শহরই যেন ঢাকার গুলিস্তান। মোড়ে মোড়ে হীরক রাণীর সচিত্র বাণী ঢাকার মতোই।

    আগেই পণ ছিল, ভাষার মাসে সর্বত্রই বাংলা, ইংরেজী পারত পক্ষে নয়। হিন্দীভাষী হোটেল রিসেপশনিস্ট, রুম সার্ভিস, রেঁস্তোরা বয়, উবার ড্রাইভার, পুলিশ – সবাই বেশ বাংলা বোঝেন; তাইলে ইংরাজী কমু ক্যান?

    *পাইদিদি সকাশে*

    ৬ নম্বর গেট দিয়ে এলে সোজা, ৯ নম্বর গেট দিয়ে এলেও সোজা, লিটিল ম্যাগ চত্বরের পাশে, ২৯৩ নম্বর গুরুর স্টল -- ইত্যাদি জপ করতে করতে সল্ট লেক সেন্ট্রাল পার্কে পৌঁছে হতচকিত। এ যেন ঢাকার বাণিজ্য মেলা! এতো বিশাল, এতো ভীড়, এতো স্টল, এতো পুলিশ, এতো আলো! অমর একুশের বইমেলার ফুরফুরে মেজাজ বা চরিত্র, কোনোটাই নাই – এক অগুনতি বইয়ের স্টল ছাড়া। তাও বিদেশী বইয়ের ছড়াছড়ি। ধুতি-পাঞ্জাবি, শাড়ি-চাদরে ষোলআনা বাঙালিআনা যেমন আছে, তেমনি হ্যাট-কোট, জিন্স-শার্ট পরা ঠাকুমাও কম নেই। মেশিনের চা, মেশিনের কফি, প্যাকেটজাত পানি মোড়ে। মঞ্চে বাউল গান, ইন্সুরেন্স কোং-এর স্টল ঘিরে কুইজের ভীড়, গিটারে দলছুট, মন্থর মিছিলে ম্যান্ডোলিন। তবে অনেকের হাতেই আছে বইয়ের প্যাকেট।

    হোঁচট বা খাবি খেতে খেতে পৌনে এক ঘন্টা ম্যালা মচ্ছবের ছবি তোলা। গুরু, কিন্তু গুরুগম্ভীর নয় – শ্লোগানের উল্টোপাল্টা প্রতিষ্ঠানে অচেনা মানুষজনের ভীড়। ক্যাশ কাউন্টারে পারমিতা দিকে সনাক্তের পর পরিচয় দিতে তারও সহাস্য অভিবাদন। পরিচয় হয় রৌহিন দা, মারিয়া কোয়েল, একাদশের ছাত্র অরূপ এবং চিরতরুণ শেখর দার সাথে। শেখর দার প্রথম কথাই এরকম, প্যাঁচা গেঞ্জি দিতে পারছি না বলে দুঃখিত। আসলে একজনকে কয়েকটি গেঞ্জি বাংলাদেশে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছিল। তিনি তা করেননি, পরে গেঞ্জিগুলোও উদ্ধার করা যায়নি।...

    মেলা এক চক্কর ঘুরে আসেন তাপস দা। সবাই হৈ হৈ করে মেশিনের কফি খাওয়া হয়। কেউ পাইদির নামে এক বাক্স চাউমিন নিয়ে আসেন। কিন্তু প্রচার হলো- পাইদির (সম্ভবত দিল্লী) ফ্লাইট বিলম্বিত, তিনি সেদিন আসছেন না। শুনে কি একটু মন খারপ হয়? এদিকে পাইদির চাউমিন হাতে হাতে ঘুরতে ঘুরতে হাপিস।

    খানিকটা বিরতি নিয়ে মেলার ভেতর এলোমেলো পরিভ্রমণ। গুরু স্টলের সীমানায় নীচু প্রাচীরে বসে গান করে একদল ছেলেমেয়ে। গিটার বাজান মাঝ বয়সী, গোল গলার গেঞ্জির, মাঝখানে সিঁথির এলোমেলো চুলের একজন। আপনি সৈকত দা? খপ করে ধরে ফেলা যায় তার কবজি। ভ্যাবাচ্যাকা দঙ্গল উঠে দাঁড়ায়। গিটারিস্টের বিচ্ছিরি কর্কশ কণ্ঠ ও মৃদূ ভুড়ির আভাসে ভাঙে ভ্রম।

    ইয়ে, শেষে খাপ থেকে বের হয় ব্রহ্মাস্ত্র। কলি ছেড়ে পুরাই ঢাকার সদরঘাট। প্রচুর সরি-টরি কইয়া নিস্তার লাভ। দাদা, বাংলাদ্যাশ থিকা পৌনে দুই ট্যাকার সাংবাদিক আইছে। ক্যাবলাকান্ত হাসির লোক্টারে দ্যাখছেন? ইত্যাদি।

    নাহ, এসব নিছকই দিবাস্বপ্ন। বাস্তবে এমন হলেও হতে পারতো, তবে হয় নাই। অবশ্য ওইরকম গানের দল, আর এলোমেলো চুলের দলনেতাকে দেখে এক সেকেন্ডের জন্য ব্যাটাকে সৈকত দাই মনে হয়েছিল।

    দেড়দিন শান্তিনিকেতন ঘুরে ৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে আবার গুরুর স্টলে হানা (অফটপিকে: শান্তিনিকেতনে আসলে অন্তত দিনদশেক ঘোরা চাই। ঝটিকা সফরে দেখা হয় নাই তেমন কিছুই। তাই ওই পর্ব আপাতত উহ্য। শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস, রবীন্দ্রনাথের হ্যান্ডল পেন, সিঁধু-কানহুর সাথে সেলফি ও ফুলডাঙার মোহন মুর্মূর অসুর পূজার পর্ব পরে হয়তো)।

    দ্বিতীয় পর্বে মেলার মচ্ছব অনেকটাই সরগড়। গুরুর স্টলে প্রথমেই চোখে পড়ে ব্যস্ত-সমস্ত পাইদিকে। লাল শাড়ির আঁচলে ধ্যানী প্যাঁচাসমূহ সার দিয়ে উপবিষ্ট, যেন একেকজন তথাগত। তিনিই হাত বাড়িয়ে দেন, আরি ব্বাস! দেখা হলো তাহলে! হুম, বছর দশেক পর, তাই না? পাইদি এখন ভার্চুয়াল থেকে একচুয়াল! হাসতে হাসতে চোখের কোন কি ভিজে উঠলো? মনে কি পড়লো অহেতুক অভিজিৎ রায়? নিঃশঙ্ক চিত্তের চেয়ে জীবনে বড় কিছু নাই।...

    একে একে আরো গুরুভ্রাতা ও ভগ্নিগণের আগমন। প্রচুর হাসিগান, খুচরো আড্ডা। ছবি, সেল্ফিবাজী, ভিডিওগ্রাফি। পাইদির সঙ্গে টুকরো আলাপচারিতার ভেতরেই হুটহাট করে ঢুকে পড়েন অনেকে। প্রচুর গুরুভক্ত ও গুরু পাঠক ঘিরে ধরেন তাকে। পাইদি জনে জনে পরিচয় করিয়ে দেন, উনি অমুক হন বাংলাদেশের বিরাট তালেবর, ইত্যাদি। দুজন ছাত্রকে মোবাইল খুলে গুরুর সাইট দেখান, লিখতে উৎসাহ দেন।

    পরে রাত ৮টায় মেলার ঝাঁপ নামলে একে একে বিদায়। কলেজ স্ট্রিটের বন্ধু সুকান্তর ডিনার উইথ ম্যাজিক মোমেন্টের নিমন্ত্রণ রক্ষার তাড়া। পরদিন ভোরে আবার ঢাকার বাস। সেই চেনা পাষানপুরীতে কলম পেষা, নিউজ ক্লার্ক!

    এই দেশেতে এই সুখ হইলো, আবার কোথায় যাই না জানি।...
  • কান্তবাবু | ***:*** | ০৪ মার্চ ২০১৯ ১৯:৩৪677911
  • সন্ধ্যে হলো যেরকম হয়ে থাকে অনুষ্ঠানহীন
    শালের ফলেরা পড়ে পথে, রাতের ফুলেরা কায়ক্লেশ
    বড় বড় ট্রাকগাড়ি রাস্তা দাপিয়ে চলে
    চালকেরা কেমন উদাস বোঝা যায়না বাইরে থেকে
    খালাসীরা কি গান শুনেছে রেডিওতে
    অথবা মত্লব ভাঁজে রাতের সড়কে ক্ষনিকের;
    সড়কের ধারে ধারে সন্ধ্যে নামে জ্বলে ওঠে
    ঝুপড়িতে কুপি, ধাবার তন্দুর, লাইন হোটেলের
    ছোকরা চাকর চলে পা টেনে যেমন সন্ধ্যা নামে
    আয়োজনহীন যেন এক টানে সময়ের খাঁজে ফাঁসা
    মুহূর্ত চিবানো বাতিল
    শহরে লোকেরা গুটি গুটি আপিসে কাছারি গেটে
    যুবকের বিক্রী না হওয়া ক্রেডিট কার্ড ধুলো পড়া
    অভিধান কাগজে পকেটে খুচরো ভাঁজ
    কি হতো কি হলে লেখাজোকা।
    পথে পথে ধুলোরা থিতিয়ে পড়ে রং লাগে
    পরতে পরতে, যারা দেখে তারা
    একদল। এইভাবে দেখা যায় মানবের দুই জাতি
    যাদের সন্ধ্যেবেলা চোখে পড়ে মেঘেদের রং,
    সন্ধ্যার রাগ, ঠিনঠিন পেয়ালার নিক্কন কানে আসে
    এবং যাদের কাছে তেমনি আপদ যেমন সকালগুলি,
    রাত্রি বা দুপুর, গোধুলি; যেমন
    সাদা কাগজের গায়ে কালির ছিটেটি দেখে যারা দেখে
    মেঘ ফুল মাছ প্রজাপতি আর যারা দেখে কাগজে
    ধেবড়ে যাওয়া কালির আপদ।
  • কান্তবাবু | ***:*** | ০৫ মার্চ ২০১৯ ২১:৩৭677912
  • গলায় যেন আটকে থাকে খাবার দাবার
    তামাক পোড়া ঝিল্লীগুলি খকখকিয়ে
    খোঁচার ব্যথায় গুণতে বসা বুকের কোথায়
    যন্ত্রপাতি আসল জিনিস গভীর কত
    কোন দরোজা কিসের ফাঁদে কেস খেয়েছে
    টাটকা সবুজ ঘাসের মেজাজ বিষম তেজী
    ধুমকি মাতাল কিন্তু নাড়ি টনটনে জ্ঞান
    আটকে থাকে যেমন অনেক প্রাচীন খাতা
    দেরাজ ঘেঁটে হস্তলিপি দড়াম করে
    আটকে থাকে সালতামামির হিসাব কিতাব
    দশক ভেঙে প্যালেট মেপে ইন্ফোগ্রাফিক
    কদিন ছিল সঙ্গে এবং কবার দূরে
    গরল ছিল কবের প্রেমে কবার বাতাস
    দিচ্ছিল ঠিক লেক বাজারের কোনাচ ঘেঁষে।

    এসব কি আর সেই যে কে গায় বেদম গীতি
    একটি দুটি পাংক্চুয়েশন জায়গা মতন

    গলায় যেন আটকে থাকে কমবয়সের
    কষ্টগুলি, প্রাচীন হলে যেমন ফুটো
    পয়সা যেমন প্রাচীন লোকের বাক্সে থাকে
    যেমন করে আটকে থাকে বকম বকম

    ফ্ল্যাটের খাঁজে পায়রা যেন বংশগত।

    দশক ভেঙে শতক জুড়ে ত্রৈরাশিকের
    হিসেব মতন ধাঁ করে দাও পদ্য লিখে
    যে পদ্যটা গলার খাঁজে আটকে থাকে
    যে পদ্যটা মধ্যরাতে আপদ বালাই।

    যে পদ্যটা ছবির বইয়ের এক ফোঁটা জল
    কিংবা ধুলো কিংবা ছেঁড়া যে পাতাটা
    ডাইরিতে নেই; যে পদ্যটা আটকে থাকে বিকেলবেলা
    নছোড়বান্দা বুকের গভীর তামাকপোড়া।
  • . | ***:*** | ০৬ মার্চ ২০১৯ ২৩:৫৩677913
  • সে নিশ্চয় এত দিনে আমাকে ভুলে গেছে, আমি তো পারছি না,
  • aranya | ***:*** | ০৭ মার্চ ২০১৯ ০৬:৪৫677914
  • বিপ্লবের কলিকাতা ভ্রমণ পাঠে খুবই আনন্দ লাভ করিলাম এবং লাইভ ভাটের আশায় রহিলাম :-)
  • Biplob Rahman | ০৭ মার্চ ২০১৯ ১৪:০৯677915
  • ধন্যবাদ অরণ্য। লাইভ ভাটের জন্য কোন সময়টা ভাল?
  • ~ | ***:*** | ০৭ মার্চ ২০১৯ ১৭:৩৮677916
  • এমজাল টইয়ের গতিমুখ দেখে আমার মনে হয়, ঝোলাগুড় কিসে দেয়, সাবান না পটকা?
  • San | ***:*** | ০৭ মার্চ ২০১৯ ২১:২১677917
  • নিবেদিতা লেন ধরে বহুদিন যাই না , তবু ভাবতাম একদিন নিশ্চই ফেরত যাব , আর গেলেই সব ঠিক আগের মত দেখব , সবাইকে হাসিমুখে ঃ(

    এরকম অবাস্তব আশা কিকরে ছিল কেজানে !! কিন্তু ছিল -
  • dc | ***:*** | ০৭ মার্চ ২০১৯ ২৩:৩৯677918
  • যাকলা এই টইটার এ কি অবস্থা হয়েছে? :d
  • বিপ্লব রহমান | ২১ আগস্ট ২০১৯ ২০:৫৬677920
  • কি কাণ্ড! গুরুচণ্ডালী নাকি হ্যাক করার চেষ্টা হইছে! রীতিমতো চাড্ডি/ ছাগু বাহিনীর সাইবার এটাক! এত্তো বড় সাহস!!

    হু হু বাবা, ঘুঘু দেখছো, ফাঁদ দেখ নাই।

    আমরাও বর্ণ পরিচয়ের কিছুদিন পরেই ছয়টি সামরিক প্রবন্ধ পড়ছি। এই সব হাইকোর্ট দেখাও কারে? আঁ!?
  • -) | ***:*** | ২৫ আগস্ট ২০১৯ ০৪:৩৪677921
  • আচ্ছা, মোদির মা আর বৌ এক্সঙ্গে থাকেন্না কেনো? শচী আর বিষ্ণুপ্রিয়া তো একত্তরেই থাকতেন!
  • একক | 162.158.***.*** | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০৩729623
  • সেদিন এট্টা গত্তে পড়ে গেলুম।
  • Atoz | 162.158.***.*** | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০৮729624
  • কতকাল পরে আবার এই টই ভেসে উঠল।
  • :-] | 162.158.***.*** | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২৬729625
  • হ, যেন কালের গত্ত থেকেই ভেসে উঠল অনন্য একক এই টই।
  • সায়ন্তন চৌধুরী | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:০৮729629
  • অনেকদিন পর হঠাৎ পরিচ্ছন্ন একা। লাগলো নিজেকে। কোনোরকম মনখারাপ ছাড়াই। কারুর জন্যে। খতিয়ে দেখলাম সবদিক (মূলতঃ প্রিয়জনদের)। মৃত্যুভয়-টয়। সেসবও দেখা হলো। শুধুই একা লাগলো, কেবল। অথচ একজন বন্ধুর মৃত্যুসংবাদ ছিলো। জীবনে প্রথম। 

    ইস্কুলের লম্বা বারান্দাটা মনে পড়ছে। আমরা যারা সোভিয়েত ইউনিয়ন আর বাবরি মসজিদ দুটোই ভেঙে যাবার পরে জন্মেছি, আমাদের কোনো অসুখ নেই। ফলে চোখ দিয়ে বারান্দায়, ছায়াকাটা রোদ। দেখি। ভাবি মৃত্যুর মুখ কত দুঃখিত, মায়াময়। মায়া হয়।

  • একক | 162.158.***.*** | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:৩৪729694
  • ডোমেইন আর রেন্জ। হুঁ।
  • | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:৫০729696
  • উই চক চক
  • বিপ্লব রহমান | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:১১729702
  • পেঁচার মোবাইল এপ বেশ করেছে!  

     

  • বিপ্লব রহমান | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:৩২729705
  • কায়দা করেই বেঁচে আছি!  :-) 

  • একলহমা | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:১৭729706
  • বাদলদা (সরকার) বলতেন - বাঁচো, বেঁচে থাকো, মরে যাওয়ার থেকে বেঁচে থাকাটা বেশি দরকার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন