গুরু হবার সহজ গাইড- কী লিখবেন , কেন লিখবেন : সৈকত বন্দোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | | ২৩ মে ২০১১ | ৯৫৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
কঠিন বইপত্তর নিয়ে ফান্ডা লড়াতে চান? বই রিভিউ করে বাজারী গুরুদের মুখে ঝামা ঘষে দিতে চান? পড়ুন "গুরু হবার সহজ গাইড - কী লিখবেন কেন লিখবেন"
পণ্ডিতরা এতদিন আমাদের বুঝিয়ে এসেছেন, বইপত্তর রিভিউ করা খুব কঠিন কাজ। এর জন্য উচ্চমানের ফান্ডা লাগে। লম্বা দাড়ি ও ঝোলা ব্যাগ দরকার হয়। এতদিন আমি-আপনি কঠিন বই নিয়ে লিখতে গেলে ওঁরা "তুই ব্যাটা কী জানিস' বলে সর্বসমক্ষে হ্যাটা করেছেন। বাজারের ব্যাগ থেকে টপাটপ ইংরিজি রেফারেন্স তুলে এনে নাকের ডগায় ছুঁড়ে মেরেছেন। ডানদিকে-বাঁদিকে দেরিদা ও নেরুদা, ফ্রয়েড ও ফুয়েন্তেস ঝেড়েছেন। দূর-দূর করে নিজেদের ঠেক থেকে গলাধাক্কা দিয়ে বিদেয় করে দিয়েছেন। আমরা, অনধিকারী শুদ্দুরেরা, জুতোপেটা খেয়ে নীরবে ফিরে এসেছি ঘরে।
এই রচনা সেই অপমানিত ও অসুখী আত্মাদের জন্য, যাঁরা আঁতেলদের কাছে এভাবেই আজীবন অপদস্থ হয়েছেন। লাথিঝাঁটা খেয়ে, মুখ চুন করে, দিনের শেষে, বিফলমনোরথ, ফিরে এসেছেন ম্লান কফিহৌস থেকে। সেই সকল বঙ্গভাষী, যাঁরা ব্যর্থ-লেখক, যাঁরা ল্যালা, মূর্খ, চণ্ডাল, অনাথ ও আতুর, তাঁদের এই অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি ও নতুন জীবনের এক রত্নগুহার গুপ্তধনের সন্ধান দেবার নিমিত্তই রচিত হল ঈশ্বরপ্রদত্ত এই সটীক দশটি বিধান (টীকা বর্তমান লেখকের)। পাতি-পাবলিকরা একে হতচ্ছেদ্দা করলে পাবেন অনন্তকাল নরককুণ্ডের পারপিচুয়াল গরম তেলের ছিটে। দিনে দশবার তেলেভাজা হবেন, ডেলি আপনার মুণ্ডু কেটে আপনারই হাতে ধরিয়ে দেবে বিশালবপু বরকন্দাজরা। আর শুদ্ধচিত্তে নিষ্ঠাভরে অনুসরণ করলেই তুড়ি মেরে প্রবন্ধ লিখবেন। এনি ডে পণ্ডিতদের নাক কেটে নেবেন। ম্যাগাজিনে ম্যাগাজিনে আপনার নাম দেখা যাবে। জীবদ্দশায় যশ ও ধন পাবেন, পরকালে মেনকা-রম্ভা (লেডিসদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা আছে)।
রেকর্ড নম্বর সহ অকৃতকার্য : সৈকত বন্দোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : নববর্ষ | ১৫ এপ্রিল ২০২২ | ৮৩৯০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪৩
বাঙালির দ্বিতীয় প্রজন্ম ক্রমশ বাংলাটা ভুলে যাচ্ছে। শুধু বিদেশে বা ভিন রাজ্যেই না, খোদ কলকাতা শহরেও। কিন্তু এসব নিয়ে বলতে গেলে বাঙালি নিজেই হাঁ হাঁ করে উঠবে। তারা সর্বভারতীয় হচ্ছে, আন্তর্জাতিক হচ্ছে। আরও কী-কী হচ্ছে, ঈশ্বরই জানেন। সেখানে এসব ছোটো মনের পরিচয় দেওয়াটা ঠিক না।
যদিও, যুক্তি দিয়ে জিনিসটা বোঝা দুষ্কর। বাঙালি যদি দিল্লি কিংবা নিউ-ইয়র্কে গিয়ে হিন্দি কিংবা ইংরিজি ভাষী হয়ে ওঠে, সেটাই যদি দস্তুর হয়, তবে বাংলায় এসে অন্যভাষীদের বঙ্গভাষী হয়ে ওঠারই কথা। আবার অন্যভাষীরা বাংলায় এসে যদি নিজের ভাষা বজায় রাখে, বা রাখতে পারে, অন্যত্র বাঙালিদেরও তেমনই হবার কথা। এর কোনোটাই হয়না। ভারতীয় বাঙালির কাছে এর কোনো ব্যাখ্যাও নেই। সম্ভবত অস্বস্তিকর বলেই। আর সেই জন্য প্রশ্নটা তোলাই ট্যাবু। তুললে কঠিন-কঠিন ইংরিজি গালি বর্ষিত হতে পারে।