ইতিহাসে পাতিহাঁস : রানা সরকার
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : স্বাধীনতা | ১৫ আগস্ট ২০২৩ | ১৬৯৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
আমাদের মানুষদের নীচের চোয়ালের হাড়টিকে বলা হয় ‘হনু’। যদি বুদ্ধি থাকলে কেউ আমাদের বুদ্ধিমান বলেন, কেউ ভেসে থাকলে যদি তাকে ভাসমান বলেন, তাহলে ব্যাকরণের সেই যুক্তিতে আমরা সবাই ‘হনুমান’ হবো না কেন?
‘চিকেন টপ’ টিভি চ্যানেলের স্টুডিও। শুরু হবে প্রাইম টাইম অনুষ্ঠান। অতিথি শ্রী ঘনশ্যাম কর্কট মহাশয়। আর রয়েছেন অ্যাঙ্কার, ক্যামেরাম্যান এবং অন্যান্য crew।
অ্যাঙ্কার - চিকেন টপ টিভি চ্যানেলের প্রাইম টাইম অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলকে স্বাগত। শুরু হচ্ছে আজকের অনুষ্ঠান “ইতিহাসে পাতিহাঁস”। অতিথি হিসেবে আমরা আজকে পেয়েছি “ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর হিস্টিরিয়া রিসার্চ” এর একজন স্বনাম ধন্য বাঙালি ইতিহাসবিদ শ্রীমান ঘনশ্যাম কর্কট মহাশয়কে... [ঘনশ্যাম কর্কট হাত তুলে নমস্কার করলেন] ঘনশ্যামবাবু আমাদের অনুষ্ঠানে আসবার জন্য ধন্যবাদ...
ঘনশ্যাম – [হেসে] জয় বজ্রং বলি... জয় হনুমান। আর ওটা হিস্টিরিয়া নয়, হিসটরিকাল।
বিবাহের একাল-সেকাল এবং প্রি হিংটিং ফটোশ্যুট-১ : রানা সরকার
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৬৪৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১২
দেশের অর্থনীতি প্রায় নিজেদের কৃতিত্বে অনেকটা ডুবিয়ে আমাদের একজন ‘মন কী আলিয়া ভাট’ বক্তব্য রাখা লেকচারার এই কিছুদিন আগে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরেকবার তাকে সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন।।
উনি দেশের বিত্তশালী পরিবারদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন যে বিদেশে গিয়ে বিবাহের অনুষ্ঠান না করে দেশে করতে, যাতে দেশের অর্থ দেশেই থাকে। কিন্তু দেশের গরীব মানুষ যদি অর্থ রোজগার না করতে পারেন, তাহলে তারা কী করবেন? অন্যের বিয়ে দেখবেন? আর আঙুল চুষবেন?
আর যদি বিবাহ দ্বারাই দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা যেত তাহলে অন্তত G7 অন্তর্ভুক্ত দেশের ছেলেমেয়েরা বিয়ের পর বিয়ে করেই চলত। কিন্তু তেমন কিছু তো শুনিনি বা পড়িনি বাপু! জাপান, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ক্যানাডা, ইতালি আর অ্যামেরিকা ইত্যাদি দেশ কি বিয়ে করে করে তাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেছে? কী কারবার!
সত্য সেলুকাস! কী বিচিত্র এই দেশ এবং দেশনেতা!
আবার অপরদিকে রাজ্যের অর্থনীতিতে আমরা ‘পাচার’ যুগে এসে পড়েছি। এই যুগে সব কিছু প্রায় পাচার হয়ে যাচ্ছে। রয়েছে দান ও খয়রাতের অর্থনীতি। তা ভালো। দান ধ্যান করা ও পাওয়া নিশ্চয়ই ভালো এবং দরকার; তা বলে ধারদেনা করে? আর কারখানা? চণ্ডীদাস এখন বেঁচে থাকলে রাজ্যের অর্থনীতি সম্পর্কে হয়তো লিখতেন – “পাচার প্রেম নিকশিত শেম / কারখানার নাম গন্ধ নাহি তায়!”।
ইতিহাসে পড়েছিলাম অনেক রাজা বা সম্রাট বিবাহাদির দ্বারা তাঁদের রাজ্যবিস্তার করতেন।
তবে উক্ত মহান নেতার কাছে বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাইব যে এক একজন বিত্তশালী পরিবার অন্তত ক’টা করে বিয়ে করলে অর্থনীতি সচল এবং চাঙ্গা হবে যদি তিনি দয়া করে এটাও জানাতেন, তবে আরও ভাল হত! সঙ্গে পশু ও পাখীদের বিবাহের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলে তো দেশ একেবারে অর্থনীতিতে এক নম্বর হয়ে যাবে! এক্কেরে ‘টরেটক্কায় টইটুম্বুর’! লালমোহনবাবুর উপন্যাসে মতো।
বিবাহের একাল-সেকাল এবং প্রি হিংটিং ফটোশ্যুট - পর্ব দুই : রানা সরকার
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ১৬ মার্চ ২০২৫ | ১২১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
আগে ছেলেরা বিয়ে করত আর মেয়েদের বিয়ে হত। মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকেই নানারকমের রাজপুত্রের গল্প শুনিয়ে চাগিয়ে দেওয়া হত। সে নাকি পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চড়ে আসবে। সঙ্গে বলা হত যে মেয়েরা আধ হাত ঘোমটা টেনে দশভুজার মতো সংসারের সব কাজ করবে; সেবা করবে। যেন বিবাহেই তাদের মোক্ষ। আর ছেলেদের পছন্দ ছিল টুকটুকে বউ। “টুকটুকে বউ আনবে আমার ভাই / গলা ছেড়ে গান গেয়ে যাই”।
এখন অবশ্য বাইক একটা ব্যাপার হয়ে উঠেছে।
তখনকার দিনে কারুর বিয়ে না হলে মনে করা হত যে সে হতভাগ্য; তার জীবনের আর কোনও মানেই নেই। বিবাহিত কুলীনদের মধ্যে সে ম্লেচ্ছ! আবার কুলীন ব্রাহ্মণেরা একগাদা বিবাহ করতেন। কমল কুমার মজুমদারের অন্তর্জলী যাত্রার কথা মনে পড়ছে।
এখন অবশ্য আবার যারা ‘একবার’ বিয়ে করেছেন তাদেরকে অবাক চোখে দেখেন ‘চার-পাঁচবার’ বিবাহ করা মানুষজনেরা।
বিয়েতে গায়ে হলুদ একটা বিরাট ব্যাপার। সেইরকমই এক বিয়েতে বরকে হলুদ মাখাচ্ছে। একজন ইওরোপীয়ান গেস্ট ব্যাপারটা খুব আগ্রহ নিয়ে দেখছিলেন। শেষে নিজেকে আর সামলাতে না পেরে জিজ্ঞাসা করলেন, “হোয়াই হি হ্যাজ বিন স্মিয়ারিং উইথ স্পাইস? টারমেরিক, অয়েল?”
একজন উত্তর দিলেন, “হি হ্যাজ বিন ম্যারিনেটেড ফর রোস্টিং”।