ফেমিনাজি থেকে সাবর্ণ রেপ এপলজিস্ট, ২৪ ঘণ্টায় : নিবেদিতা মেনন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ নভেম্বর ২০১৭ | ১৬৭৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার যেটা, সেটা হল রায়া সরকার এবং আরও কয়েকজন, যারা মেহমুদ ফারুকি আর খুরশিদ আলম ধর্ষণ মামলায় সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছিলেন, তাঁদের ভোল বদলানো বা পালটি খাওয়া। কিছু স্বাক্ষরকারীর মতে উভয় ক্ষেত্রেই যেহেতু বিশেষভাবে ধর্ষণের অভিযোগই করা হয়েছে, তাই তার বিচারের ক্ষেত্রে নির্ধারিত পদ্ধতিতেই এগোন দরকার। মেহমুদ ফারুকির মত খুরশিদ আলমও আমাদের অনেকের কাছেই পরিচিত ছিলেন। উভয়ক্ষেত্রেই যে নারীবাদীরা অভিযোগ সমর্থন করেছিলেন, উদার বামপন্থী নারীবাদী বৃত্তের ভেতর থেকেই তাঁদের ‘ফেমিনাজি’ বলে আক্রমণ করা হয়েছিল। ‘ফেমিনাজি’ অর্থাৎ কোনও প্রমাণ ছাড়াই যারা পুরুষের বিরুদ্ধে আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু আমাদের অবস্থানটা হল এইরকম যে যেকোন অভিযোগকে বিচার পাওয়ার দিকে এগিয়ে দেবার আগে আমরা তার ‘প্রমাণ’ চাইব না কিন্তু আশা করব যে কি ধরণের অভিযোগ জানানো হছে সে বিষয়ে অভিযোগকারীর যেন পরিষ্কার ধারণা থাকে। আমরা জানি খুরশিদের ক্ষেত্রে অভিযোগকারিণী মধু কিশওয়র অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর একটা ভিডিও রেকর্ডিং বানিয়েছিলেন আর প্রথামাফিক অভিযোগ জানানোর আগেই সেটা গণমাধ্যমে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু এঁরা যখন অন্য নারীবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তখন তাঁরা এইভাবে এগোনোর বদলে সঠিক পদ্ধতিতে অভিযোগ দায়ের করতে উৎসাহিত করেছিলেন। দুঃখজনকভাবে খুরশিদ আত্মহত্যা করায় এই মামলা বন্ধ হয়ে যায়। যে নারীবাদীরা এই দুই ক্ষেত্রে অভিযোগকারিণীদেরসমর্থন করেছিলেন, তাদেরই ফেমিনাজি বলা হয় কারণ তাঁরা গণমাধ্যমের বিচারে (মিডিয়া ট্রায়ালে) আগ্রহী, যার সবটা তাঁদের আয়ত্তে থাকে না। আশ্চর্যজনকভাবে রায়া সরকার, যিনি একদিন কবিতা কৃষ্ণণকে সাম্প্রদায়িক আর ফেমিনাজি হওয়ার জন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ পর্যন্ত করেছিলেন (সেই সব পোস্ট অবশ্য পরে ডিলিট করে দিয়েছেন), তিনিই আজ কোনও প্রেক্ষিত বিচার না করেই যেকোনও পুরুষের ওপর যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। অন্য নারীবাদীরা যারা সেই সময় আমাদের আক্রমণ করেছিলেন আশ্চর্যজনকভাবে তাঁরাও দিক বদলে অন্য দিকে চলে যাচ্ছেন অতি দ্রুত। তাহলে কে এই দুই বিপরীত পক্ষ তৈরী করে তাদের লড়িয়ে দিল আর কোন দিকটাই বা বেশি ক্ষমতাবান!